আমরা আনন্দের সাথে ঘোষনা করছি রাইজিং ভয়েস ক্ষুদ্র অনুদানের প্রথম পাঁচ নাগরিক মাধ্যম (সিটিজেন মিডিয়া) আউটরিচ প্রকল্পের নামগুলো। এরা পরিনামদর্শিতা এবং আকাঙ্খার দিক দিয়ে অন্য সব আবেদনগুলোর মুল সুরের সাথে সামন্জস্যপুর্ন।
আমরা ৪০টি ভিন্ন দেশ থেকে মোট ১৪২টি প্রকল্প প্রস্তাব পেয়েছি। এই অভূতপুর্ব সারা পাওয়াটা প্রমান করে সিটিজেন মিডিয়া সম্পর্কে সারা বিশ্বেই উৎসাহ রয়েছে। এবং এই আগ্রহ দক্ষিন চিলি থেকে নাইজেরিয়ার গ্রাম; মালীর একটি বিদ্যুতবিহীন গ্রাম থেকে মন্গোলিয়ার শহরগুলোতে; ইথিওপিয়ার এক এতিমখানা থেকে কেনিয়ার এইচআইভি/এইডস দ্বারা অক্ষম রোগীদের জন্যে একটি প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত বিস্তৃত। এই তালিকা আরও লম্বা, কিন্তু এইসমস্ত প্রকল্প প্রস্তাবগুলির সবাগুলোর একটিই আকাঙ্খা, ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের কমিউনিটির লোকদের নিজেদের কথা বলানো নিশ্চিত করা। বিশ্বায়নের জোয়ারে ভেসে যাওয়ার আগে তাদের নিজেদের ইতিহাস বর্ননা করা, তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য লিপিবদ্ধ করে রাখা তাদের কাছে গুরুত্বপুর্ন।
আগামী মাসগুলোতে আমি নীচের একেকটি প্রকল্পকে বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করব। আমরা অচিরেই রাইজিং ভয়েসেস ওয়েবসাইটটি উন্মোচন করব যেখানে আপনারা এইসব প্রকল্পগুলোকে এবং প্রকল্পে অংশগ্রহনকারীদের অনুসরন করতে পারবেন। আর দেরী না করে নিন্মে উপস্থাপিত হচ্ছে আমাদের প্রথম পর্বের অনুদান প্রাপ্তরা:
ভিকি রেমো দোহার্তি – সিয়েরা লিয়ন:
ভিকি সমন্বয়ে সাহায্য করছে “থিন্ক বিল্ড চেন্জ স্যালোন” উদ্যোগকে যা গৃহযুদ্ধ বিদ্ধস্ত সিয়েরা লিওনের পুনর্নির্মানে ব্যস্ত রয়েছে। এই উদ্যোগ সিয়েরা লিওনের যুবসমাজকে স্থানীয় এনজিওগুলোতে ভাতাসহ ইন্টার্নশীপের মাধ্যমে প্রশিক্ষন এবং কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করাচ্ছে। এই বছর এই প্রশিক্ষনরতদের তাদের অভিজ্ঞতাগুলোকে ব্লগ, অডিও এবং ভিডিওর মাধ্যমে লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে। সিয়েরা লিয়নের বিভিন্ন এনজিওগুলোতে কর্মরত অবস্থায় তাদের এই অভিজ্ঞতাগুলো নিন্মোক্ত বিষয়গুলো তুলে ধরবে: স্বাস্থ, পরিবেশ, গণতন্ত্র, সংঘাত পরবর্তী পুনর্গঠন, নারী অধিকার বিষয়গুলো, তথ্য প্রযুক্তি, শিক্ষা, সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা, এবং সম্প্রদায় গঠন। এই প্রশিক্ষনপ্রাপ্তরা যখন এই টুলগুলোতে পারদর্শী হয়ে যাবে তারা সারা দেশ জুড়ে বেশ কয়েকটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করে অন্যান্য গ্রুপদের সিটিজেন মিডিয়া সংক্রান্ত শিক্ষাদান করবে।
জুলিয়ানা রিন্কন, জর্জ মন্টোয়া এবং আলভারো রামিরেজ – মেডেলিন, কলাম্বিয়া:
এই প্রকল্পের শুরু হয়েছিল দুটি ভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে। জুলিয়ানা এবং জর্জ, মেডেলিন পাবলিক লাইব্রেরী সিস্টেমের একটি আউটরিচ উদ্যোগকে পুঁজি করে নতুন মাধ্যম (নিউ মিডিয়া) সংক্রান্ত বেশ কটি ওয়ার্কশপ করার জন্য তৈরি হয়েছিল। আলভারো লা লোমা দো সান জাভিয়েরের বস্তিতে একটি ভিডিও ব্লগিং ওয়ার্কশপ আয়োজনের প্রস্তাব দেয়। ভাগ্যক্রমে, এই দুই দল সময়, যন্ত্রপাতি এবং লোকবল ভাগাভাগি করতে সম্মত হয়েছে যাতে দুটি প্রকল্পই একসাথে এগোতে পারে।
কাজী রফিক ইসলাম এবং ক্যাথরিন ওয়ার্ড – ঢাকা, বাংলাদেশ:
কাজী রফিক ইসলাম এবং ক্যাথি ওয়ার্ড হচ্ছেন ঢাকার নারী জীবন প্রকল্পের যথাক্রমে সমন্বয়কারী এবং নির্বাহী পরিচালক। এদের ওয়েবসাইট থেকে আপনি জানতে পারবেন তারা ঢাকার যুবনারীদের নিয়ে চোখে পড়ার মত কাজ করছেন। রাইজিং ভয়েসেস ক্ষুদ্র অনুদানের সহায়তায় তারা তাদের বর্তমানে সেবাদানরত বাংলা, ইংলিশ এবং কম্পিউটার ক্লাসের মাধ্যমে বাংলাদেশী নারীদের ব্লগিং, ফটোগ্রাফী এবং ভিডিওব্লগিং করতে শেখাবেন। আপনারা ‘বাংলাদেশ আমাদের চোখে’ এই ব্লগের মাধ্যমে ইতিমধ্যে এইসব নারীদের পোস্ট করা কিছু নমুনা দেখতে পারবেন।
মারিও দুরান, এডুয়ার্ডো আভিলা, হুগো মিরান্দা – এল আলটো, বলিভিয়া:
মারিও, এডুয়ার্ডো, এবং হুগো চারটি সপ্তাহে দুইদিন করে সেশনের একটি ধারাবাহিক প্রশিক্ষন কার্যক্রম চালাবে। তারা এল আলটো, বলিভিয়ার একটি ইন্টারনেট কাফেতে হাতে কলমে শিক্ষা দেবে কিভাবে প্রশিক্ষনার্থীরা তাদের জীবন, সংসার এবং সমাজ নিয়ে লিখবে। তারা বলিভিয়ার অন্যান্য স্থানে এবং সারা বিশ্বের লোককে জানাবে যে দারিদ্রপীড়িত এল আলটো শহরের দৈনন্দিন জীবন অন্যান্য স্থানের থেকে ভিন্ন নয়।
বিষন সমাদ্দার, সাহার রোমানী, অপর্না রায় – কলকাতা, ভারত
বিষন আর সাহার ‘কলম: মারজিনস রাইট’ হচ্ছে ভারতীয় প্রান্তিক যুবাদের একটি সৃজনশীল লেখার প্রোগ্রাম। তারা ইতিমধ্যেই ছাপামাধ্যম ব্যবহার করে কবিতা এবং সৃজনশীল লেখার মাধ্যমে সৃজনশীলতা ও নিজস্ব অভিব্যাক্তি প্রকাশের কিছু বিস্ময়কর কাজ করেছেন। রাইজিং ভয়েসেস মাইক্রোগ্রান্ট “পাড়ার ডায়রী” নামে একটি নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব করবে যা কলকাতা বস্তিতে বসবাসরত সুবিধাহীন যুবাদের নাগরিক সাংবাদিক হতে সাহায্য করবে। তারা তাদের আবেদনে যেমন লিখেছেন “বেশীরভাগ সময়েই ভারতের বস্তিগুলোকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয় অথবা শোষন করা হয়”। ওখানে বসবাসরত যুবক-যুবতীদের যদি তাদের নিজস্ব কথা বলতে দেয়া হয় তাহলে তারা তাদের সমাজকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করার শক্তি পাবে। আপনারা ‘কলম: মারজিনস রাইট’ এর ব্লগ থেকে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আপনারা আগামী সপ্তাহ এবং মাসগুলোতে এই পাঁচটি রোমান্চকর প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। আগামী সেপ্টেম্বরে রাইজিং ভয়েসেস এর পরবর্তী পর্বের ফান্ডিং হবে। এবারে আবেদন পদ্ধটিতি আরও বেশী করে উন্মুক্ত করে দেয়া হবে যাতে গ্লোবাল ভয়েসেস এর পাঠকরা প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলো সম্পর্কে তাদের বিচার জানাতে পারেন, উপদেশ দিতে পারেন এবং লোকবল বা অন্য উপায়ে সাহায্য করতে পারেন।
আপনারা যদি এই ধরনের আরও অনুপ্রাণিত করা প্রকল্পকে সহায়তা দিতে চান তবে দয়া করে যোগাযোগ করুন outreach@globalvoicesonline.org ।
2 টি মন্তব্য
Hehe! Good work!
Great work!